Logo
TV
ব্রেকিং নিউজঃ
Monday 13th May 2024
সারা বাংলা খুলনা খুলনা
মোংলা দিয়ে টালি রপ্তানি হচ্ছে সাত দেশে
 SUNNEWSBD.COM
 Publish: 27-Oct-2018

মোংলা দিয়ে টালি রপ্তানি হচ্ছে সাত দেশে

খুলনা সংবাদদাতা, সাননিউজবিডি ডটকম : মোংলা সমুদ্রবন্দর দিয়ে সাত দেশে মাসে গড়ে ৫০ হাজার ডলার মূল্যের মাটির টালি রপ্তানি হচ্ছে।

মুরারীকাটি ও শ্রীপতিপুরে মাটির কারিগররা তৈরি করছেন এসব বাহারি টালি। কুড়িটিরও বেশি টালি তৈরির কারখানা রয়েছে এখানে। টালি শিল্পের জন্য সাতক্ষীরার কলরোয়া উপজেলার মুরারীকাটি ও শ্রীপতিপুর স্বনামেই পরিচিতি পেয়েছে। কলরোয়ার এই এলাকাটির নাম হয়ে গেছে ‘ইতালি নগর’।

এই ‘ইতালি নগর’ বিদেশ থেকে নিয়ে আসছে ডলার ও ইউরো। এসব কারখানায় প্রতিদিন অন্তত ৫০০ লোকের কর্মসংস্থান হচ্ছে।

স্থানীয় সূত্র জানায়, ২০০৩ সালে এই মাটির টালি প্রথমে রপ্তানি হয় ইটালিতে। রুহুল আমীন নামের এক ব্যবসায়ী প্রথমে টালি রপ্তানি করেন। এরপর ধরে এখানে আরনো এক্সপোর্ট ইনপোর্ট, শুভ ট্রেড লিঃ, এফ এইচ খান লিঃ, মা কটেজ, নিকিতা ইন্টারন্যাশনাল, কটো ইনোভেটর, জে কে ইন্টারন্যাশনাল, পলো ইপো অরগানিক, ডি চন্দ্র পাল নামক প্রতিষ্ঠানগুলো বছরের পর বছর বিদেশি ক্রেতাদের চাহিদা পূরণ করছে।

এসব প্রতিষ্ঠান ইতালি, দুবাই, ফ্রান্স, ইউ কে, অস্ট্রেলিয়া, জার্মানি ও নেদারল্যান্ডে তাদের টালি রপ্তানি করছে।

রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, খুলনা সূত্রে জানা যায়, এবছরের জুন মাসে ৩০ হাজার ১৫২ ডলার, জুলাই মাসে ৫৬ হাজার ৩৫৫ ডলার, আগস্ট মাসে ৬১ হাজার ৮৪২ ডলার, সেপ্টেম্বর মাসে ৫২ হাজার ৩৬৪ মার্কিন ডলার, একই মাসে ১৪ হাজার ৪৮৯ ইউরো মূল্যের টালি বিদেশে রপ্তানি হয়েছে।

জে কে ইন্টারন্যাশনালের ব্যবস্থাপক (বাণিজ্যিক) আরিফুল ইসলাম জানান, বিদেশিরা এখনকার টালি ঘরের মেঝে ও দেওয়ালে ব্যবহার করছে। দুবাইতে বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রতি পিস টালি ২৮০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

বাংলাদেশে নিযুক্ত প্রাক্তণ মার্কিন রাষ্ট্রদূত ড্যান ডব্লিউ মজিনাও এখানের টালি কারখানা পরিদর্শন করেছিলেন। পরিদর্শনকালে তিনি পালপাড়ার বিভিন্ন ডিজাইনের টালি দেখে খুবই সন্তোষ প্রকাশ করেন।

কাররা এক্সপোর্ট-ইম্পোর্ট প্রাইভেট লিমিটেডের সত্ত্বাধিকারি রুহুল আমিন জানান, তিনি ইতালিতে টালি রপ্তানির জন্য ভালো মাটি খুঁজতে থাকেন দেশের বিভিন্ন প্রান্তে। অবশেষে তার সেই কাঙ্খিত মাটির সন্ধান পান এই মুরারীকাটি এলাকাতেই। রুহুল আমিনই সর্ব প্রথম এ এলাকায় রপ্তানিযোগ্য টালি ব্যবসার পথ দেখান।

কলারোয়া উপজেলা টালি মালিক সমিতির সভাপতি ও ক্লে টাইলস ফ্যাক্টরির স্বত্বাধিকারি গোস্ট চন্দ্র পাল জানান, ১৯৪৭ সাল থেকে তারা টালি তৈরি করছেন। তাদের পূর্ব পুরুষরাও এ শিল্পের সাথে জড়িত ছিলেন।

তিনি জানান, গত বছর বছর বিদেশে টালি রপ্তানি করে এখানকার কারখানা মালিকরা আয় করেছেন প্রায় ১২ কোটি টাকা।

তিনি বলেন, ‘ইউরোপের বিভিন্ন দেশে দিন দিন আমাদের তৈরি করা টালির চাহিদা বাড়ছে। তবে টালি কারখানার সংখ্যা বেশি হয়ে যাওয়ায় স্টক থেকে যাচ্ছে বেশি। প্রতি বছর এখান থেকে ৩-৪শ কন্টেইনার টালি মোংলা দিয়ে ইতালি যায়। বছরে ৬ থেকে ৭ মাস টালি তৈরি ও বিক্রি হয়। সাধারণত বছরের অক্টোবর মাস থেকে শুরু হয় টালি তৈরি মৌসুম। চলে মে-জুন পর্যন্ত। বাকি সময় বর্ষাকাল থাকায় টালি তৈরি করা যায় না।’

একেকটি টালির একেক রকম নাম। রেক্ট্যাংগুলার, স্টেপ টাইলস, হেক্সা গোনার, স্কাটিং প্রভেন সালেহ প্রভৃতি উল্লেখযোগ্য। প্রতি পিস টালির দাম ৫ টাকা থেকে ৭৫ টাকা পর্যন্ত। ৩০ সেন্টিমিটার দৈর্ঘ্য ২০ সেন্টিমিটার প্রস্থ ও ৩ সেন্টিমিটার পুরু একটি স্কয়ার টালির দাম ১০ টাকা। ৫০ সেন্টিমিটার দৈর্ঘ্য ২৫ সেন্টিমিটার প্রস্থ ও ৩ সেন্টিমিটার পুরু রেকট্যাংগুলার টালির দাম ৩৫ টাকা, বহুল প্রচলিত ৩০ সেন্টিমিটার দৈর্ঘ্য ১৫ সেন্টিমিটার প্রস্থ ও আড়াই সেন্টিমিটার পুরু একটি রেকট্যাংগুলার টালির দাম ৬ টাকা। আবার ৪০ সেন্টিমিটার প্রস্থ ও ৩ সেন্টিমিটার পুরু একটি স্কয়ার টালির দাম ৪০টাকা।

স্কয়ার টালি সাধারণত দেয়ালের শোভা বর্ধনে ঘরের চালের ছাউনিতে ব্যবহার করে থাকে বিদেশিরা। ঘরের মেঝে সাজানোর জন্য রয়েছে ফুলের আকারে প্রভেন সালেহ। প্রতি পিস প্রভেন সালেহর দাম ২৫ টাকা। এভাবে একেকটি টালির নকশা, গঠন ও আকার অনুযায়ী দামের হেরফের রয়েছে। ঘর সাজানোর জন্য সার্কেল টাইলস। ৪টি সার্কেল টাইলস নিয়ে একটি সেট।





সাননিউজবিডি ডটকম




এখানে আরও খবর রয়েছে





তারিখ অনুযায়ী খবর দেখুনঃ



সর্বাধিক পঠিত