Logo
TV
ব্রেকিং নিউজঃ
Saturday 5th October 2024
জাতীয়
তিস্তার পানি আবারো বাড়ছে প্লাবিত নিম্নাঞ্চল
 SUNNEWSBD.COM
 Publish: 30-Sep-2024

তিস্তার পানি আবারো বাড়ছে প্লাবিত নিম্নাঞ্চল



সাননিউজবিডি ডটকম ডেস্ক:॥জাতীয়॥ উজানের পাহাড়ি ঢল আর কয়েক দিনের টানা ভারি বৃষ্টিতে তিস্তা নদীর পানি প্রবাহ বেড়ে বিপদ সীমার ২ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হলেও দুপুরে কমতে শুরু করে। সৃষ্ট বন্যায় তলিয়ে গেছে লালমনিরহাট সান্তাহার রেলরুটের অর্ধকিলোমিটার পথ। রোববার বিকেলে বন্যার পানিতে ডুবে থাকা রেল লাইন সংস্কার করে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। বিকেল ৩টা হাতীবান্ধা উপজেলার দোয়ানীতে দেশের বৃহত্তম সেচ প্রকল্প তিস্তা ব্যারাজের ডালিয়া পয়েন্টে পানি প্রবাহ রেকর্ড করা হয় ৫২ দশমিক ৭ মিটার। যা বিপদ সীমার (স্বাভাবিক ৫২ দশমিক ১৫ মিটার) ৮ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হয়। এর আগে সকাল ৬টায় বিপদসীমার ২সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়।

বন্যা সতর্কীকরণ কেন্দ্র জানায়, শনিবার দুপুর থেকে বিপদসীমার কাছাকাছি প্রবাহিত দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে তিস্তা নদীর ডালিয়া পয়েন্টে। রোববার সকাল ৬টায় বিপদসীমার ২ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। পরবর্তিতে দুপুর নাগাদ কমে বিপদসীমার নিচে নেমে আসে পানি প্রবাহ। বিকেল ৩টায় বিপদসীমার ৮ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে তিস্তা নদীর পানিপ্রবাহ রেকর্ড করা হয় ডালিয়া পয়েন্টে। ফলে বামতীরের জেলা লালমনিরহাটের ৫টি উপজেলায় পানিবন্দি হয়ে পড়েছে প্রায় ২৫ হাজার পরিবার। প্রতিমুহুর্তে বাড়ছে এর সংখ্যা। আতংকিত হয়ে পড়ে তিস্তাপাড়ের মানুষ।

পানির চাপ বেড়ে যাওয়ায় লালমনিরহাট সান্তাহার রেলরুটের লালমনিরহাট সদর উপজেলার গোকুন্ডা ইউনিয়নের রতিপুর এলাকায় অর্ধকিলোমিটার রেলপথ ডুবে যায়। এ সময় পানির স্রোতে ভেসে যায় রেল লাইনের পাথর। ফলে দিনভর ঝুঁকি নিয়ে ধীর গতিতে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক রেখেছে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। একই সাথে জরুরী ভিত্তিতে সংস্কার করা হয় রেল লাইন। আপাতত রেল যোগাযোগ স্বাভাবিক রয়েছে। আমাদের সংবাদদাতারা জানান

তিস্তার পানি আবারো বাড়ছে নি¤œাঞ্চল প্লাবিত : লালমনিরহাট সংবাদদাতা : উজানের ঢল ও টানা বৃষ্টিতে লালমনিরহাটে তিস্তা নদীর পানি ক্রমান্বয়ে বাড়তে শুরু করেছে। বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার কাছাকাছি অবস্থান করছে। পানি বেড়ে যাওয়ায়। নি¤œ অঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। গতকাল রোববার (২৯ সেপ্টেম্বর) বিকাল ৩টায় তিস্তা পয়েন্ট পানির সমতল ৫২.০৭ মিটার (বিপৎসীমা ৫২.১৫ মিটার) যা বিপদসীমার ০৮ সে.মি নিচে। ফলে তিস্তা নদীর তীরবর্তী নি¤œাঞ্চল প্লাবিত। পানির চাপ কমাতে তিস্তা ব্যারাজের ৪৪ টি কপাট খুলে দিয়েছে কর্তৃপক্ষ।

জানা গেছে, তিস্তার পানি বৃদ্ধির ফলে লালমনিরহাটের ৫ উপজেলার তিস্তা তীরবর্তী নি¤œাঞ্চল ও চরাঞ্চলের ঘরবাড়িতে পানি প্রবেশ করে। চর এলাকার রাস্তাঘাট তলিয়ে যায়। তিস্তার পানি বেড়ে যাওয়ায় হাতীবান্ধা উপজেলার গড্ডিমারী, দোয়ানী, সানিয়াজান ইউনিয়নের নিজ শেখ সুন্দর, সিঙ্গামারি ইউনিয়নের ধুবনী, সিন্দুর্না, চর সিন্দুর্না, পাটিকাপাড়া, ডাউয়াবাড়ী। কালীগঞ্জ উপজেলার ভোটমারী, শৈইলমারী, নোহালী, চর বৈরাতি। আদিতমারী উপজেলার মহিষখোচা, লালমনিরহাট সদর উপজেলার খুনিয়াগাছ, কালমাটি, রাজপুর, গোকু-া ইউনিয়নের তিস্তা নদী তীরবর্তী নি¤œাঞ্চল ও চরাঞ্চলের পরিবারগুলো পানিবন্দী হয়ে পড়েন। কিন্তু রোববার সকাল থেকে আবারও পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় নতুন করে বন্যার আশঙ্কা করছেন। সেই সাথে গরুর প্রধান খাদ্য খড় ভিজে যাওয়ায় তারা বিপাকে পড়েছেন গবাদি পশু নিয়ে। এদিকে কমে যাওয়া তিস্তার পানি বৃদ্ধির খবরে আবারও চিন্তায় পড়েছেন তিস্তাবাসী।

আদিতমারী উপজেলা মহিষখোঁচা ইউনিয়নের তিস্তা গোবর্ধন চরবাসীরা জানান, শনিবার বিকাল থেকে তিস্তার পানি বৃদ্ধি পেতে শুরু করে। সন্ধ্যার মধ্যেই তিস্তা নদী তীরবর্তী নি¤œাঞ্চলের ঘরবাড়িতে পানি প্রবেশ করে। আর রাতেই সেই পানি বিপৎসীমার কাছাকাছি প্রবাহিত হওয়ায় নি¤œাঞ্চল ও চরাঞ্চল প্লাবিত হয়। লালমনিরহাট সদর উপজেলার খুনিয়াগাছ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান খায়রুজ্জামান বাদল জানান, তিস্তার পানি বৃদ্ধি পেয়ে আমার ইউনিয়নের নদীতীরবর্তী নি¤œাঞ্চল ও চরাঞ্চলের ঘরবাড়িতে পানি প্রবেশ করে। ফলে নি¤œাঞ্চল ও চরাঞ্চলের মানুষ দুর্ভোগে পড়েছে। শনিবার থেকে পানি আবারো বৃদ্ধি পাওয়ায় বন্যার আশঙ্কা করছেন তিস্তাবাসী। লালমনিরহাট পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী শুনিল কুমার জানান, রোববার সকাল ৬টায় তিস্তা নদীর ডালিয়া পয়েন্টে পানি প্রবাহ বেড়ে বিপৎসীমার ২ সেন্টিমিটার ওপর প্রবাহিত হচ্ছে। একদিনে বিকাল ৩টায়

বিপদসীমার ৮ সে.মি নিচ দিয়ে পানি প্রবাহ রেকর্ড করা হয়েছে। পানি বাড়া কমার মধ্যে দিয়ে তিস্তাপাড়ে বন্যা দেখা দিয়েছে। লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক এইচ এম রকিব হায়দার জানান,কিছু পরিবার পানিবন্দী হয়ে পড়েছে তাদের জন্য ত্রাণ সামগ্রী খুব দ্রুত পৌঁছে দেয়া হবে। বন্যা মোকাবেলা করতে জেলা ও উপজেলা প্রশাসন আমরা প্রস্তুত রয়েছি।

তিস্তা নদীর পানি বিপৎসীমার উপরে

নীলফামারী সংবাদদাতা : উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ী ঢলে তিস্তা নদীর পানি বিপৎসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। শনিবার রাত থেকে তিস্তা নদীর পানি নীলফামারীর ডালিয়া তিস্তা ব্যারেজ পয়েন্টে বাড়তে থাকে এবং রোববার সকাল ৬ টার পর থেকে বিপৎসীমার ২ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়।

ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের পানি পরিমাপক নূরুল ইসলাম জানান, রোববার সকাল ৬টা থেকে তিস্তার পানি বিপৎসীমার ২ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হলেও ৮টার পর থেকে তিস্তার পানি কমতে শুরু করে এবং ৯টায় পানি কমে বিপৎসীমার ১ সেন্টিমিটার এবং বিকেল ৩ টা থেকে ৮ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হয়। এদিকে পানির গতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে তিস্তা ব্যারেজের ৪৪টি জলকপাট খুলে রাখা হয়েছে।

হঠাৎ করে তিস্তা নদীতে পানি বেড়ে যাওয়ায় নদী তীরবর্তী ডিমলা ও জলঢাকা উপজেলার নি¤œাঞ্চলের বাড়িঘরে পানি উঠেছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা।

পানি উন্নয়ন বোর্ড নীলফামারীর ডালিয়া ডিভিশনের উপ-প্রকৌশলী রাশেদীন জানান, উজানের ঢলে তিস্তার পানি ভোর থেকে বিপৎসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় ব্যারেজের সবক’টি জলকপাট খুলে দেয়া হয়েছে।

ভূরুঙ্গামারীতে হু হু করে বাড়ছে সবকটি নদের পানি

কুড়িগ্রাম সংবাদদাতা : কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারীতে গত কয়েকদিনের টানা ভারী বর্ষণ আর ভারত থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের কারণে দুধকুমার, ফুলকুমার ও কালজানীসহ উপজেলার সবকটি নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। টানা বৃষ্টিতে খাল বিল পানিতে টইটম্বুর হয়ে গেছে। গত ২৪ ঘন্টায় দুধকুমার নদের পানি পাটেশ্বরী পয়েন্টে ১.৮৬ মিটার পানি বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার ৩৮ সে. মিটার নীচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। দুধকুমার নদীর দুকুল উপচে যেন কোন মুহূর্তে প্লাবিত হতে পারে নি¤œাঞ্চল।

দুধকুমার নদী পাড়ের বাসিন্দা ফরিদুল, আমজাদ ও মোজাম্মেল হক জানান, যে হারে নদীর পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে তাতে দুই এক দিনের মধ্যে চরাঞ্চল পানিতে তলিয়ে যাবে। বন্যা হওয়ার আশঙ্কায় আছি। পাইকেরছড়া ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুর রাজ্জাক জানান, যে হারে দুধকুমার নদের পানি বাড়ছে তাতে রাতেই কিছু এলাকা প্লাবিত হতে পারে। ইতোমধ্যে নদী তীরবর্তী এলাকার বেশ কিছু ফসলি জমি পানিতে নিমজ্জিত হয়েছে।

কুড়িগ্রাম কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ পরিচালক মোঃ আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, হঠাৎ করেই তো তিস্তার পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করেছে। আমাদের লোকজন কাজ করছে মাঠে কী পরিমাণ ফসল পানিতে নিমজ্জিত হয়েছে পরে জানা যাবে। কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী রাকিবুল হাসান জানান, উজানে ভারি বৃষ্টিপাতের কারণে জেলার সবকটি নদ-নদীর পানি বাড়ছে। তবে বিপৎসীমা অতিক্রম করার সম্ভবনা নেই।





সাননিউজবিডি ডটকম




এখানে আরও খবর রয়েছে





তারিখ অনুযায়ী খবর দেখুনঃ



সর্বাধিক পঠিত