Logo
TV
ব্রেকিং নিউজঃ
Tuesday 17th September 2024
সম্পাদকীয়
করোনা ভাইরাসের বিরুদ্ধে
 SUNNEWSBD.COM
 Publish: 25-Jan-2020

করোনা ভাইরাসের বিরুদ্ধে



চীন এশিয়া মহাদেশের বহুল জনগোষ্ঠীসম্পন্ন একটি শিল্পোন্নত দেশ। বিশ্ব বাজারে চীনের শিল্পপণ্যের চাহিদা ব্যাপকভাবে আলোচিত। শুধু তাই নয়, সারাবিশ্বে দক্ষ ও প্রযুক্তি জ্ঞানসম্পন্ন মানবসম্পদ গড়তে চীনের অবস্থান আজ সুদৃঢ়। ফলে চীন উন্নত বিশ্বের কাতারে শক্তিমান প্রত্যয়ী ভূখন্ড। আবার এই চীনেই ঘটেছে এক দুঃসহ ব্যাধির মরণ কামড়। করোনা ভাইরাস নামে চিহ্নিত এই ব্যাধিটির প্রথম প্রাদুর্ভাব ঘটে হুবেই রাজ্যের উহান শহরে। প্রথম স্বল্পাকারে হলেও এখন তো বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪৭৩ জনে। শুধু তাই নয়, এই প্রাণঘাতী রোগে নিহতের সংখ্যা ১৭ জন। আরও বৃদ্ধি পাওয়ার আশঙ্কা করছে দেশটির সংশ্লিষ্ট স্বাস্থ্য অধিদফতর। সঙ্গে উদ্বেগ আর অস্বস্তি নিয়ে পুরো বিষয়টির তীক্ষ্ন নজরদারিতে নেমেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। এক জরুরী বৈঠকে সিদ্ধান্ত নিতে সংশ্লিষ্ট উর্ধতন কর্মকর্তারা একত্রিত হয়ে সারা বিশ্বে এমন ব্যাধিতে আক্রান্তের সংখ্যা নিয়ে বিশেষ বিবেচনায় জরুরী ব্যবস্থা গ্রহণের তাগিদও প্রকাশ করেছেন। কারণ ইতোমধ্যে রোগটির বিস্তার শুধু চীনেই থাকেনি, বিশ্বের অন্যান্য জায়গায়ও এর প্রকোপ ছড়িয়ে পড়ার ব্যাপারটি দৃশ্যমান হচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্রেও একজন রোগীকে চিহ্নিত করা হয় করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হিসেবে। চীনের জাতীয় স্বাস্থ্য কমিশনের উপ-পরিচালক লি বিনের অভিমত এমন প্রাণঘাতী ভাইরাসটির উৎস এবং ছড়িয়ে পড়ার ব্যাপারে আরও সূক্ষ্ম গবেষণা জোরদার করা হচ্ছে। এদিকে চীনের জাতীয় নববর্ষকে ঘিরে সারা বিশ্বে ছড়িয়ে থাকা সংশ্লিষ্ট নাগরিকরা স্বদেশের ভূমিতে পা রাখছেন। আশঙ্কা করা হচ্ছে সবাই যখন তার কর্ম ও আবাসস্থলে ফিরে যাবে বিশ্বের বিভিন্ন জায়গায় সেক্ষেত্রে এই রোগটি দেশ থেকে দেশান্তরে ছড়িয়ে পড়ার ব্যাপারটিকেও উড়িয়ে দেয়া সঙ্গত নয়। বরং আগাম সতর্কতা হিসেবে এসব বিষয় নিয়েও সংশ্লিষ্টদের ভাবনা-চিন্তা করা এবং কার্যকরী পদক্ষেপ নেয়া সমীচীন।

চীন ও যুক্তরাষ্ট্র ছাড়াও তাইওয়ান, ফিলিপিন্স, জাপান এবং দক্ষিণ কোরিয়ায়ও করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত রোগী চিহ্নিত হয়েছে। তা আরও সংক্রমণের আশঙ্কা করছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। তাছাড়া বিশাল ভূখন্ড এবং বিরাট জনসংখ্যা নিয়ে চীনের বিস্তৃত বলয়। সেখানেও এক স্থান থেকে অন্য স্থানে সংশ্লিষ্ট অধিবাসীদের চলাফেরা করতে হয়। আর এসবের মধ্য দিয়ে রোগটির বিস্তার রোধ করা কতখানি সহজ হবে তা অনুমান করা কঠিন। তাই বিমান, রেল এবং সড়কপথের মূল পয়েন্টে যাত্রীদের ব্যাপারে বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন করা হয়েছে। ২০০২-২০০৩ সালে চীনে সার্স ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার কাহিনী বেশি দিনের নয়। সে সময় ৮০০ আক্রান্ত রোগী মারাও যায়। সব কিছু বিবেচনায় এনে নতুন ভাইরাস নিয়ে চীন কর্তৃপক্ষ এবং বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা উদ্বেগ আর উৎকণ্ঠায় পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে।

এর আগে বাংলাদেশে সোয়াইন ফ্লু ও বার্ড ফ্লু নিয়েও এক ধরনের আশঙ্কা তৈরি হয়েছিল। শুধু তাই নয়, নিপা ভাইরাসও সারাদেশকে আতঙ্কিত অবস্থায় ফেলে দেয়। বাংলাদেশেও বিমানবন্দরগুলোতে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেয়া জনস্বার্থেই বিশেষ জরুরী। করোনা ভাইরাস যেন কোনভাবেই বাংলাদেশকে ঝুঁকির মধ্যে ফেলতে না পারে সে ব্যাপারে আগাম জরুরী ব্যবস্থা নেয়াও কর্তৃপক্ষের সচেতন দায়বদ্ধতা রয়েছে। বিদেশ থেকে আসা নাগরিকদের পরীক্ষা-নিরীক্ষা ছাড়া অনুপ্রবেশের অনুমতি দেয়া উচিত হবে না। সংক্রামক রোগ-বালাই ছড়িয়ে পড়তে খুব বেশি সময়ও লাগে না। ইতোমধ্যে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাও তীক্ষè নজরদারিতে আন্তর্জাতিক বলয়ে সংশ্লিষ্ট রোগটি নিয়ে বিচার-বিশ্লেষণ এবং গবেষণাকেও ত্বরান্বিত করেছে। স্বতন্ত্রভাবে প্রত্যেক দেশ এ ব্যাপারে সজাগ-সতর্ক দৃষ্টি নিবদ্ধ করলে রোগটির ক্রমবিস্তার থেকে সারা দুনিয়া রক্ষা পাবে। আর এটাই সব দেশকে সার্বক্ষণিকভাবে করে যেতে হবে।





সাননিউজবিডি ডটকম




এখানে আরও খবর রয়েছে





তারিখ অনুযায়ী খবর দেখুনঃ