Logo
TV
ব্রেকিং নিউজঃ
Tuesday 17th September 2024
সম্পাদকীয়
লকডাউন!
 SUNNEWSBD.COM
 Publish: 27-Mar-2020

লকডাউন!





বৈশ্বিক মহামারীরূপে আবির্ভূত করোনাভাইরাস বা কোভিড-১৯ পরিস্থিতি মোকাবেলায় বাংলাদেশ সরকার সব মিলিয়ে দশ দিন সাধারণ ছুটি ঘোষণা করেছে। সরকারের এই নির্বাহী আদেশ বেসরকারী অফিসের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য হবে। গার্মেন্টসহ শিল্প-কারখানা নিজস্ব উদ্যোগে পরিচালিত যথাযথ সুরক্ষা প্রদান সাপেক্ষে চালু রাখা, অন্যথায় বন্ধ ঘোষণা করার কথা বলা হয়েছে। দূরপাল্লার যানবাহনসহ ট্রেন-লঞ্চ-স্টিমার-ফেরি চলাচল স্থগিত করা হয়েছে। রাজধানীতেও রিক্সাসহ যানবাহন চলাচল একেবারে বন্ধ রাখার কথা বলা হয়েছে। তদুপরি স্থানীয় প্রশাসন সহায়তাকল্পে এবং সামাজিক সুরক্ষা নিশ্চিত করতে মাঠ পর্যায়ে সেনাবাহিনী নিয়োগ করাও হয়েছে, যা কার্যকর হয়েছে মঙ্গলবার থেকে। ব্যাংকিং কার্যক্রমও খুবই সীমিত করা হয়েছে এবং জোর দেয়া হয়েছে অনলাইনে ব্যাংকিং লেনদেনের ওপর। করোনা পরিস্থিতি নিয়ে প্রধানমন্ত্রী বুধবার দেশ ও জাতির উদ্দেশে দিকনির্দেশনামূলক ভাষণ দিয়েছেন। উল্লেখ্য, ইতোমধ্যে সব স্কুল-কলেজ-উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। সীমিত পাঠদানের ব্যবস্থা করা হয়েছে টিভির মাধ্যমে। কড়াকড়ি আরোপ করা হয়েছে সভা-সমাবেশ ও গণজমায়েতের ওপর। যার মধ্যে মসজিদ-মন্দির-প্যাগোডা-গির্জাও রয়েছে। চারটি দেশ ব্যতিরেকে অন্য সব দেশ থেকে যাত্রী আসা বন্ধ করা হয়েছে। বন্ধ করে দেয়া হয়েছে সব বড় সুপার মার্কেট ও বিপণি বিতান। আদালতের কার্যক্রমও সীমিত করা হয়েছে। রাজধানীসহ দেশের অনেক জেলা ও অঞ্চল কার্যত উপদ্রুত অথবা অবরুদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। সার্বিক অবস্থাদৃষ্টে প্রতীয়মান হচ্ছে যে, সরকার শেষ পর্যন্ত লকডাউনের পথেই যাচ্ছে।

মালয়েশিয়া, ফিলিপিন্স করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব ঠেকাতে দেশব্যাপী ১৮ থেকে ৩১ মার্চ পর্যন্ত ঘোষণা করেছে ‘লকডাউন’। যুক্তরাজ্য, ভারত ও দক্ষিণ আফ্রিকায় ২১ দিনের লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছে। বর্তমানে পৃথিবীর এক-তৃতীয়আংশ মানুষ প্রায় গৃহবন্দী। এ সময় সব ধরনের যানবাহন, সুপার শপ, পাবলিক প্লেস, চেন শপ, মার্কেট, শপিং কমপ্লেক্স, এমনকি মসজিদ-মন্দিরের সব ধরনের কার্যক্রম একেবারে বন্ধ অথবা সীমিত থাকবে। মোটকথা, জরুরী পরিস্থিতি মোকাবেলা ছাড়া সব ধরনের একটিভিটিস বন্ধ ঘোষণা করেছে সরকার। লকডাউন বা শাটডাউন যাই বলি না কেন প্যাটার্ন বা চরিত্র একই। একটানা ১৪ দিন পাবলিক প্লেসে সব ধরনের আনাগোনা, কেনাকাটা, জনসমাগম বা অনুরূপ কার্যক্রম একেবারে বন্ধ। বিনোদনের তো প্রশ্নই ওঠে না। সম্ভবত অনুরূপ হতে যাচ্ছে বাংলাদেশেও। সরকারী তথা জাতীয় পর্যায়ে এরূপ শাটডাউন বা লকডাউন ঘোষণা এবং তা বাস্তবায়ন হলে দেশ চলবে কিভাবে? সাধারণ মানুষ কিভাবে বাঁচবে? তদুপরি যেটি মোক্ষম প্রশ্ন তা হচ্ছে এই অবস্থা চলবে কতদিন ধরে? জাতীয় ও বিশ্ব অর্থনীতিরইবা কি হবে? স্বেচ্ছা নির্বাসন তথা সেফ কোয়ারেন্টাইন শেষ হলেই যে পরিস্থিতির উন্নতি ঘটবে তার নিশ্চয়তা দেবে কে বা কারা? অবশ্য আশার খবরও আছে। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সাহায্য নিয়ে করোনার প্রতিষেধক আবিষ্কারে অনেকটাই অগ্রসর হয়েছেন বিজ্ঞানীরা। মানুষের ওপর তার প্রয়োগও হয়েছে। তবে তা বাজারে আসতে আসতে বাণিজ্যও যে শুরু হবে না কে জানে।

চীনের উহানে উদ্ভূত এই মারাত্মক ভাইরাসটি এর মধ্যে আক্রমণ করেছে প্রায় সমগ্র বিশ্বকে, যা থেকে মুক্ত থাকতে পারেনি বাংলাদেশও। চীন একটি অত্যন্ত উচ্চ অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও উৎপাদন ক্ষমতাসম্পন্ন দেশ, যার ওপর বাংলাদেশসহ বিশ্বের অনেক দেশ প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে নির্ভরশীল। চীনের সঙ্গে বাংলাদেশের পোশাক, চামড়া, সুতাসহ নানা পণ্যের সরাসরি বাণিজ্য থাকায় ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে বাংলাদেশের অর্থনীতিও। এই মহাসঙ্কট থেকে বেরিয়ে আসার পথ ও পদ্ধতি বের করতে হবে বিশ্ব নেতৃবৃন্দসহ অর্থনীতিবিদদের। এর পাশাপাশি ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে করোনার প্রতিষেধক ও টিকা আবিষ্কারে। সর্বশক্তি নিয়ে একযোগে ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে জাতীয় ও বিশ্ব অর্থনৈতিক ক্ষয়ক্ষতি পুনরুদ্ধারে। সরকার সেটি করতে সক্ষম হবে বলেই প্রত্যাশা





সাননিউজবিডি ডটকম




এখানে আরও খবর রয়েছে





তারিখ অনুযায়ী খবর দেখুনঃ