Logo
TV
ব্রেকিং নিউজঃ
Tuesday 17th September 2024
খেলা
ইতিহাস গড়ে প্রথম শিরোপা ম্যানচেস্টার সিটির
 SUNNEWSBD.COM
 Publish: 12-Jun-2023

ইতিহাস গড়ে প্রথম শিরোপা ম্যানচেস্টার সিটির



সাননিউজবিডি ডটকম ডেস্ক:-॥খেলাধুলা॥ ফাইনালের আগে গোটা ফুটবল দুনিয়ায় রব উঠেছিল ম্যানচেস্টার সিটি কত গোলে জিতবে, কতটা সাবলীলভাবে ইতিহাস গড়বে! কিন্তু উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ২০২২-২৩ মৌসুমের ফাইনালটা একপেশে হতে দেয়নি ইতালিয়ান পরাশক্তি ইন্টার মিলান। বরং দুর্ভাগ্য ভর না করলে শিরোপা জয়ের উচ্ছ্বাস করতে পারত তারাই। কিন্তু ভাগ্যবিধাতা চাননি বলেই হয়তো কাঁদতে হয়েছে মার্টিনেজ, এডিন জেকো, ব্রোজোভিচদের।

সিটির ইতিহাস গড়ার মিশনে গোলপোস্টে দুর্ভেদ্য দেওয়াল হয়ে আবির্ভূত হন ব্রাজিলিয়ান গোলরক্ষক এডারসন। তিনি অন্ততপক্ষে চারটি নিশ্চিত গোল হজম থেকে সিটিকে রক্ষা করেন। এর মাঝে আচমকাই স্পেনের তরুণ ডিফেন্সিভ মিডফিল্ডার রড্রিগো হার্নান্দেজের চোখ ধাঁধানো গোলে ইতিহাস গড়া জয় নিশ্চিত হয় ইংলিশ পরাশক্তিদের।

এমন আবহে এবারের চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালে ইন্টার মিলানকে ১-০ গোলে হারিয়ে নিজেদের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো চ্যাম্পিয়ন হয়েছে ম্যানচেস্টার সিটি। শনিবার রাতে তুরস্কের রাজধানী ইস্তানবুলের আতাতুর্ক অলিম্পিক স্টেডিয়ামে জমজমাট ম্যাচটি উপভোগ করেন প্রায় ৭২ হাজার দর্শক। তারকা কোচ পেপ গার্ডিওলার কোচিংয়ে গত ছয় বছরে ইংলিশ ফুটবলে একক আধিপত্য বিস্তার করেছে ম্যানসিটি। এই সময়ে তারা জিতেছে টানা তিনবারসহ মোট পাঁচবার ইলিশ প্রিমিয়ার লিগ শিরোপা। সঙ্গে আরও অনেক ট্রফি। বাকি ছিল কেবল স্বপ্নের চ্যাম্পিয়ন্স লিগ। সেই আক্ষেপও এবার ঘুচে গেছে। এবারের মৌসুমে প্রিমিয়ার লিগ ও এফএ কাপ জিতে আগেই ঘরোয়া ‘ডাবল’ পূর্ণ করে সিটি। এবার ইউরোপ সেরা হয়ে ঐতিহাসক ‘ট্রেবল’ জয়ও হয়ে গেছে। ইংলিশ ফুটবলে দ্বিতীয় ও ১৯৯৯ সালে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের পর প্রথম দল হিসেবে এই অসাধারণ কীর্তিগাথা রচনা করেছে সিটিজেনরা। অন্যদিকে ইন্টার মিলান এর আগে তিনবার ইউরোপ সেরা হয়েছে। ১৯৬৪ ও ১৯৬৫ সালে টানা দুইবার ট্রফি জয়ের পর ২০১০ সালে তারকা কোচ জোশে মরিনহোর অধীনে তৃতীয়বার বিজয়ের হাসি হাসে তারা। এবার ইন্টারের সামনে ১৩ বছর পর চতুর্থ শিরোপা জয়ের সুযোগ ছিল। কিন্তু ফাইনালে দারুণ খেলেও শেষ পর্যন্ত হৃদয়ভাঙার বেদনায় পুড়তে হয়েছে তাদের। পুরো ম্যাচে বলের দখল কিছুটা সিটির (৫৬ শতাংশ) বেশি থাকলেও অন্যান্য সব বিভাগে আলো ছড়ায় ইন্টার। তারা মোট ১৪ বার গোলের জন্য শট নেয়। বিপরীতে সিটি শট নিতে পারে মাত্র সাতবার। চৌদ্দবারের মতো ইন্টারের ছয়টি শট ছিল গোলপোস্টে। কিন্তু দুর্ভাগ্য তাদের, সিটির গোলরক্ষক এডারসনের অতিমানবীয় পারফরম্যান্স একবারও জালের দেখা পায়নি। বিপরীতি সিটির চারটি প্রচেষ্টা ছিল পোস্টে, এ থেকে ম্যাচজয়ী একটি গোলও আদায় করে নেয় তারা। ম্যাচের প্রথমার্ধ বলতে গেলে ছিল ম্যাড়ম্যাড়ে। অনেকেই ভেবেছিলেন সিটির আক্রমণে দিশেহারা হয়ে যাবে ইন্টার। কিন্তু প্রথম ২৫ মিনিটে তারা একটি আক্রমণও শাণাতে পারেনি। অবশ্য প্রথমার্ধে একটি ভালো সুযোগ সৃষ্টি করেছিল সিটিই। কিন্তু পুরো ম্যাচে সুপার ফ্লপ থাকা আর্লিং হালান্ডের প্রচেষ্টা অসাধারণ দক্ষতায় ফিরিয়ে দেন ইন্টার গোলরক্ষক ওনানা। বিরতির পর ৫৮ মিনিটে প্রতিপক্ষের ভুলে দারুণ সুযোগ পায় ইন্টার। ডিফেন্ডার মানুয়েল আকানজির ব্যাকপাস ধরে সবাইকে পেছনে ফেলে লাউটারো মার্টিনেজ ঢুকে পড়েন ডি বক্সে। কিন্তু তিনি ফাঁকায় দাঁড়ানো রোমেলু লুকাকুকে পাস না দেওয়ায় সুযোগটা নষ্ট হয়।

ফাইনালের আগে নকআউট পর্বে মাত্র তিনটি গোল হজম করা ইন্টারের জমাট রক্ষণ ৬৮ মিনিটে মুহূর্তের জন্য স্থবির হয়ে পড়ে। চোখ ধাঁধানো বুলেট শটে ইন্টারের জাল কাঁপিয়ে সিটিকে এগিয়ে দেন রড্রি। পরের মিনিটেই সমতায় ফিরতে পারতো ইন্টার। কিন্তু ফেডেরিকো ডিমার্কোর হেড বাধা পায় ক্রসবারে। এরপরও সুযোগ ছিল; ফিরতি বলে আবারও হেড করেন তরুণ ইতালিয়ান ডিফেন্ডার। কিন্তু এবার বল সামনেই দাঁড়ানো লুকাকুর পায়ে লাগলে হতাশা বাড়ে ইন্টারের।

ম্যাচের ৮৮ মিনিটে গোল প্রায় পেয়েই গিয়েছিল ইন্টার। ডি বক্সে বাঁ থেকে সতীর্থের হেড একেবারে গোলমুখে পেয়ে যান লুকাকু। সামনে একমাত্র বাধা ছিলেন এডারসন। কিন্তু ফাঁকায় পেয়েও বেলজিক তারকা হেড করেন এডারসনের পায়ে! সুবর্ণ সুযোগ হারানোর হতাশায় দলটির খেলোয়াড়-কোচ থেকে শুরু করে ভক্ত-সমর্থকদের মাথায় হাত ওঠে। ৯০ মিনিটে আবারও লুকাকু ডি বক্সে অনেকটা ফাঁকায় বল পেয়েও বাইরে মারেন। পাঁচ মিনিট যোগ করা সময়ের একেবারে শেষেও একটা সুযোগ আসে তিনবারের চ্যাম্পিয়নদের সামনে। কিন্তু রবিন গোজেন্সের হেড ফিরিয়ে দিয়ে সিটিকে শিরোপা জয়ের উৎসবে ভাসান ব্রাজিলিয়ান এডারসন। ম্যাচ শেষে জয়সূচক গোল করা উচ্ছ্বসিত রড্রি বলেন, স্বপ্ন সত্যি হয়েছে। আমার চারপাশে যারা আছে, জানি না কত বছর ধরে তারা সবাই অপেক্ষায় ছিলেন। তাদের এই সাফল্য প্রাপ্য, আমাদের প্রাপ্য। দলের ইতিহাসের অংশীদার হতে পেরে আমি গর্বিত।

অ্যাস্টন ভিলা, লিভারপুল, চেলসি, ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড ও নটিংহ্যাম ফরেস্টের পর ষষ্ঠ ইংলিশ ক্লাব হিসেবে ইউরোপীয়ান কাপ বা উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগের শিরোপা জয় করেছে সিটিজেনরা। আর এই প্রথমবারের মতো এক মৌসুমে একই দেশের (ইতালি) তিনটি ক্লাব ইউরোপের বড় কোনো আসরে ফাইনালে হারের তেতো স্বাদ পেয়েছে। এর আগে ইউরোপ লিগে স্প্যানিশ ক্লাব সেভিয়ার কাছে এএস রোমা ও ইউরোপা কনফান্সে লিগে ইংলিশ ক্লাব ওয়েস্টহ্যাম ইউনাইটেডের কাছে হেরেছে ইতালিয়ান ক্লাব ফিওরেন্টিনা।





সাননিউজবিডি ডটকম




এখানে আরও খবর রয়েছে





তারিখ অনুযায়ী খবর দেখুনঃ