Logo
TV
ব্রেকিং নিউজঃ
Thursday 21st November 2024
সম্পাদকীয়
কবে হবে সরল সুদ
 SUNNEWSBD.COM
 Publish: 06-Sep-2019

কবে হবে সরল সুদ



প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আনুষ্ঠানিক বৈঠকে বাংলাদেশ এ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্সের (বিএবি) নেতৃবৃন্দ অঙ্গীকার করেছিলেন যে, যথাসত্বর তারা সিঙ্গেল ডিজিট তথা সরল সুদহার কার্যকর করবেন। এই সুদহার হবে দশ-এর নিচে, আমানত ও ঋণের অনুপাতে ৬-৯-এর মধ্যে। এর বিনিময়ে তারা সরকারের কাছ থেকে কিছু সুযোগ-সুবিধাও আদায় করে নিয়েছেন। যেমনÑ কর্পোরেট ট্যাক্স কমানো, সরকারী আমানতের অন্তত পঞ্চাশ শতাংশ বেসরকারী ব্যাংকগুলোতে গচ্ছিত রাখা ইত্যাদি। সরকার প্রতিশ্রুতি রক্ষা করলেও কোন ব্যাংক অদ্যাবধি তা বাস্তবায়ন করেনি, সিঙ্গেল ডিজিট তো দূরের কথা। ফলে আমানতকারীদের পাশাপাশি শিল্পোদ্যোক্তারাও বেশ হতাশ হয়ে পড়ছেন। উপরন্তু দ-সুদে নাকাল হচ্ছেন অনেক উদ্যোক্তা। অন্যদিকে প্রায় সব ধরনের সঞ্চয়পত্রে সুদের হার কমে যাওয়ায় আমানতকারীরাও হতাশ। সর্বশেষ অর্থমন্ত্রী মে মাস থেকে সরল সুদ কার্যকর তথা বাস্তবায়নের আশ্বাস দিলেও তা অদ্যাবধি অধরা। অথচ ব্যাংকগুলো শেয়ার মার্কেটে অর্থলগ্নিসহ ব্যবসা-বাণিজ্য করে যাচ্ছে অবলীলায়।

প্রসঙ্গত, ২০১৮-’১৯ অর্থবছরের বাজেটে সুদহার কমাতে ব্যাংকের কর্পোরেট ট্যাক্স আড়াই শতাংশ কমানো হয়েছে। এছাড়া কম সুদে সরকারী আমানতের টাকার প্রায় অর্ধেক এখন বেসরকারী খাতের ব্যাংকগুলোতে রাখা হচ্ছে। সুদ কমাতে ব্যাংকগুলোর অন্যান্য খরচ কমিয়ে আনারও পদক্ষেপ রয়েছে প্রস্তাবিত বাজেটে। এ কারণে ব্যাংক ঋণের ও আমানতের সুদহার কমানোর কথা। আশা ছিল সরকারী এসব উদ্যোগের ফলে দেশে বিনিয়োগ ও কর্মসংস্থানে গতি ফিরে আসবে। ইতোমধ্যে সরকারের এ সিদ্ধান্তকে বেসরকারী খাতের উদ্যোক্তারা স্বাগত জানিয়েছেন। এফবিসিসিআই বলছে, ঋণের সুদ কমানোর ফলে নতুন বিনিয়োগে শিল্পোদ্যোক্তারা এগিয়ে আসবেন। দেশে শিল্প স্থাপনসহ কর্মসংস্থান বাড়বে।

ব্যাংকগুলোর ঋণের সুদের হার সিঙ্গেল ডিজিটে নামিয়ে আনার লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে ব্যাংক খাতে বেশ কিছু পদক্ষেপও গ্রহণ করা হয়। গত জুলাইয়ে ব্যাংকগুলোর নগদ জমার বাধ্যবাধকতা বা সিআরআর ১ শতাংশ কমিয়ে ৫.৫ শতাংশ করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। সরকারী আমানতের ৫০ শতাংশ বেসরকারী ব্যাংকগুলোতে রাখতেও প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। ব্যাংকগুলোর ঋণ-আমানত অনুপাত বা এডিআর সমন্বয়ের সময়ও বাড়িয়ে দেয়া হয়। সবই করা হয়েছে দেশের আর্থিক খাতে সুনির্দিষ্ট কিছু লক্ষ্য সামনে রেখে। ধারণা করা হয় বাণিজ্যিক ব্যাংকের বিনিয়োগ মুনাফা বা ঋণের সুদ সিঙ্গেল ডিজিট বা এক অঙ্কে নামিয়ে আনলে কাক্সিক্ষত লক্ষ্যমাত্রায় বিনিয়োগ বৃদ্ধি পাবে। নতুন শিল্পোদ্যোক্তা তৈরির পাশাপাশি নতুন কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে। হায়, সে গুড়ে এখন পর্যন্ত ছাই!

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী শিল্পঋণের বিপরীতে শিল্পোদ্যোক্তাদের বর্তমানে সুদ গুনতে হচ্ছে ১৪ থেকে ১৭ শতাংশ পর্যন্ত। এছাড়া ঋণ নেয়ার সময় প্রক্রিয়াকরণ ফিসহ আরও যেসব চার্জ নেয়া হয় তাতে এ হার ২০-২২ শতাংশ পর্যন্ত হয়ে থাকে। কোন কোন ব্যাংকের বিরুদ্ধে আরও বেশি সুদ নেয়ার অভিযোগ রয়েছে। বাণিজ্যিক ব্যাংকের ঋণের বিপরীতে সুদ বা বিনিয়োগের মুনাফার হার নমনীয়-সহনীয় হওয়া মানেই তা ব্যবসাবান্ধব হবে। আমাদের দেশে ঘটেছে তার উল্টো। ঋণের ওপর উচ্চ সুদের হারের অনেক কারণও বিভিন্ন সময় উল্লেখ করা হয়েছে। এসব সমস্যার সমাধান করতে পারলে ব্যাংক ঋণের ওপর সুদের হার কমানো সব বাণিজ্যিক ব্যাংকের পক্ষেই সম্ভব হবে। ব্যাংকিং খাতে সুবাতাস বয়ে যাক এটাই প্রত্যাশা। এ জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংকের আরও দায়িত্বশীল ভূমিকা ও কর্মতৎপরতা জরুরী। তবে ঋণের সুদ কমাতে গিয়ে যে আমানতের সুদও কমানো হয়েছে তাতে সাধারণ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে তাতে কোন সন্দেহ নেই। অন্যদিকে ব্যাংকগুলোও নানা অজুহাতে ঋণের সুদহার কমাচ্ছে না, এটা দুঃখজনক বৈকি।

প্রকাশিত : ৬ সেপ্টেম্বর ২০১৯





সাননিউজবিডি ডটকম




এখানে আরও খবর রয়েছে


এই মুহুর্তের শীর্ষ খবর



তারিখ অনুযায়ী খবর দেখুনঃ



সর্বাধিক পঠিত