Logo
TV
ব্রেকিং নিউজঃ
Tuesday 17th September 2024
ভ্রমন
বেড়িয়ে আসুন প্রকৃতি কন্যার শহর সিলেট
 SUNNEWSBD.COM
 Publish: 03-Jul-2018

বেড়িয়ে আসুন প্রকৃতি কন্যার শহর সিলেট।

‘আজি ঝড় ঝড় মুখর বাদল ও দিনে, ঘরে থাকে না মন, হারিয়ে যেতে চায় কারণ-অকারণ। মনে হয় যেন ঘুরে আসি প্রকৃতির সান্নিধ্যে তাই তো এবার ছুটতে মন চায় সিলেটের পানে।’ প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের অপরূপ লীলাভূমি আমাদের প্রিয় বাংলাদেশ। প্রকৃতির সঙ্গে মিশে আছে আমাদের হাজার বছররের ইতিহাস, ঐতিহ্য। প্রকৃতির অপরূপ কন্যা হিসাবেই আখ্যায়িত করা হয় সিলেট জেলাকে। পুরো জেলা ঘিরেই রয়েছে দৃষ্টিনন্দন সব স্থাপত্যশৈলি আর প্রাকৃতিক নানা দৃশ্য। জল, স্থল, বন, পাহাড়, নদী সবই রয়েছে সিলেটে। জেলার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য সত্যি মনোমুগ্ধকর। সিলেট বাংলাদেশের উত্তর-পূর্বে অবস্থিত একটি প্রাচীন জনপদ। শুধু প্রাকৃতিক সৌন্দর্যই নয় রয়েছে বনজ, খনিজ ্ও মৎস্য সম্পদে ভরপুর একটি জেলা সিলেট। অনেক জ্ঞানী, গুণী মানুষের জন্মস্থান সিলেট। ইংল্যান্ডের রাজধানী লন্ডন হলেও দ্বিতীয় লন্ডন হিসাবে আখ্যায়িত করা হয় সিলেটকে। রয়েছে জৈন্তিয়া পাহাড়ের অপরূপ দৃশ্য, জাফলংয়ের মনোমুগ্ধকর সৌন্দর্য, ভোলাগঞ্জের সারি সারি পাথরের স্তূপ, পাথরের বিছানাখ্যাত বিছানাকান্দি, জনপ্রিয় পর্যটন কেন্দ্র রাতারগুল জলাবনসহ তামাবিল, কিনব্রিজ, আলী আমজাদের ঘড়ি ইত্যাদি দৃষ্টি নন্দনীয় চিত্তাকর্ষক স্থান। এ সিলেটের বুকেই ঘুমিয়ে আছেন ‘হযরত শাহজালাল (রা:) ও শাহপরান (রা:)। তাদের মাজার শরিফ দেখতে প্রতিদিনই অসংখ্য মানুষের সমাগম ঘটে সিলেটে। প্রিয় পাঠক এ সিলেটের বুকেই চিরশায়িত হয়েছেন বাংলা চলচ্চিত্রের প্রাণ পুরুষ সালমান শাহ। আজ আমরা আপনাদের সিলেটের দৃষ্টিনন্দন স্থান এবং প্রাকৃতিক সৌন্দর্যম-িত কয়েকটি স্থানের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেব।

হযরত শাহজালাল (রা:) এর মাজার ॥ ৩৬০ আউলিয়া নিয়ে ইসলাম প্রচারের জন্য প্রথম সিলেটের বুকে পা রাখেন হযরত শাহজালাল (রা:)।ভারতীয় উপমহাদেশের বিখ্যাত সুফি দরবেশ তিনি। ধারণা করা হয় ৩২ বছর বয়সে ইসলাম ধর্ম প্রচারের লক্ষ্যে নিয়ে তিনি সিলেটের বুকে পা রাখেন। সিলেট আগমনের সময়কাল নিয়ে নানা জনের নানা অভিমত থাকলে ও বিখ্যাত এ সুফী দরবেশ ইসলাম প্রচারে সফল হন। ধারণা করা হয় তার সময়কালেই সিলেটে সবচেয়ে বেশি লোককে ইসলাম ধর্মের অনুসারী করেন তিনি। পরবর্তীতে সিলেট মাজারেই চিরনিদ্রায় শায়িত আছেন হযরত শাহজালাল (রা:)। সিলেট মাজার দেখতে এবং জিয়ারত করতে প্রতিদিনই অসংখ্য মানুষের আগমন ঘটে সিলেটে। মাজারে রয়েছে বিখ্যাত জালালী কবুতর। হযরত শাহজালাল (রা:) এর আধ্যাত্মিক শক্তির পরিচয় পেয়ে হযরত নিজাম উদ্দিন আউলিয়া তাকে এক জোড়া সুরমা রঙের কবুতর বা জালালী কবুতর উপহার দেন। সে থেকেই সিলেট অঞ্চলে জালালী কবুতর ছড়িয়ে পড়তে থাকে আনাচে-কানাচে। বর্তমানে মাজারে গেলে দেখা মেলে অসংখ্য জালালী কবুতরের।

মাজারে আরও রয়েছে গজার মাছ। মাজারে প্রবেশ করলেই উত্তর দিকে একটি পুকুর রয়েছে। পুকুরটিতে রয়েছে অসংখ্য গজার মাছ। প্রতি দিনই দর্শনার্থীরা মাজারে এসে মাজার ্ও জিয়ারত করেন এবং সঙ্গে সঙ্গে কবুতর ও গজার মাছকে আহার ও দেন। তবে মাজার কর্তৃপক্ষ কবুতর এবং গজারের আহারের সরবরাহ করে থাকেন। এছাড়া মাজারে সংরক্ষিত রয়েছে হযরত শাহজালাল (রা:) ব্যবহৃত দ্রব্যাদি। দেশের বহু অঞ্চল থেকেই মানুষ এখানে আসেন এগুলো স্বচক্ষে দেখার জন্য।

শাহপরাণ (রা:) মাজার ॥ সিলেটের আরেক পুণ্যতীর্থ বা আধ্যাত্মিক স্থাপনা এটি। শাহজালালের অন্যতম সঙ্গী ছিলেন তিনি। ধর্ম প্রচারের উদ্দেশ্যে তিনি ও সহযাত্রী ছিলেন শাহজালাল (রা:) এর।দুই মাজারের দূরুত্ব প্রায় ৮ কি.মি.। সিলেট শহরের পূর্ব দিকে খাদিম নগর এলাকায় অবস্থিত। বিপুল পরিমাণ দর্শনার্র্থী

স্থানটিকে দেখতে প্রতিদিন ভিড় জমান। শাহপরাণ (রা:) ছিলেন শাহজালালের বোনের ছেলে (ভাগ্নে)। তিনি সিলেটের হবিগঞ্জ, নবীগঞ্জসহ বিভিন্ন স্থানে ইসলাম প্রচার করেন। এ কারণে একটিবার মাজারটি দেখতে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে মানুষ প্রতিদিনই ছুটে আসে। পাহাড়ের টিলায় মাজার বলে অনেকেই আগ্রহ নিয়ে মাজারটি দেখতে ছুটে আসেন।

জাফলং ॥ জাফলং বাংলাদেশের অন্যতম একটি পর্যটন কেন্দ্র। সীমান্ত এলাকায় প্রকৃতি যেন তার রূপ, যৌবন শোভিত করেছে। ভারতের মেঘালয় সীমান্ত ঘেঁষা খাসিয়া-জৈন্তা পাহাড়ের পাদদেশে অবস্থিত জাফলং। পাহাড় আর নদীর সম্মিলন দেখতে দূর-দূরান্ত থেকে মানুষ ছুটে আসে স্থানটিকে এক নজর দেখার জন্য। শীত মৌসুমে লোকের সমাগম বেশি হলেই বছরের অন্যান্য সময়টাতে যে কম লোকের সমাগম এখানে হয় এমনটা নয় বছরের সব সময়ই লোকারণ্য থাকে স্থানটি। শুধু দেশের পর্যটকই নয় বিদেশী পর্যটকদেরও ভিড় সেখানে লক্ষ্য করা যায়। জাফলংয়ের সবচেয়ে চমৎকার দৃশ্য হলোÑ সেখানকার পিয়াইন নদী। নদীর দুইপাশে পাহাড়ের দৃশ্য নজর কাড়ে ভ্রমণপ্রিয়সী মানুষদের। এছাড়া বিজিবি ক্যাম্প থেকে পাহাড়ের দৃশ্য, জাফলংয়ের আখতা ঝর্ণা এছাড়া ভারতের ডাউকি বন্দরের ঝুলন্ত সেতুর দৃশ্য দেখতে প্রতিদিনই মানুষ স্থানটিতে ভিড় জমান। মনোরম এ দৃশ্য দেখতে চাইলে এখনি ঘুরে আসুন স্থানটিতে।



কীভাবে সিলেট যাবেন ॥ বাস, ট্রেন, প্লেন উভয় দিয়েই যেতে পারেন সিলেটে। সড়ক পথে গেলে ঢাকা থেকে ৭০০ থেকে ৯০০ টাকার মধ্যে যেতে পারেন সিলেট। সেখান থেকে পর্যটক স্পটগুলোতে ও স্বল্প মূল্যে যেতে পারেন। আর নিজের গাড়ি থাকলে তো কথাই নেই। ভ্রমণ হোক আপনার আনন্দের প্রত্যাশা।





সাননিউজবিডি ডটকম




এখানে আরও খবর রয়েছে





তারিখ অনুযায়ী খবর দেখুনঃ